সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ১২:৩১ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :

বাগেরহাটের রামপালে আনসার ভিডিপি কর্মকর্তা রীনার অর্থ বাণিজ্য তুঙ্গে

Reporter Name
  • Update Time : মঙ্গলবার, ৭ মে, ২০২৪
  • ৭২ Time View

 

এ এইচ নান্টু, বিশেষ প্রতিনিধি (বাগেরহাট) || আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে সামনে রেখে রামপাল উপজেলা আনসার ও ভিডিপি কর্মকর্তা রীনা বেগমের অর্থ বাণিজ্য এখন তুঙ্গে। ভিডিপি কমান্ডার আবজাল ও আনসার কমান্ডার আ. হাকিমের মাধ্যমে একটি সিন্ডিকেট গড়ে তুলে এমন অর্থ বাণিজ্য করে আসছেন ওই কর্মকর্তা রীনা। এতে গোটা উপজেলার সহাস্রাধিক আনসার ও ভিডিপি সদস্য ওই সিন্ডিকেটের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ সমস্যা থেকে রেহাই পেতে সাধারণ আনসার ও ভিডিপি সদস্যরা রামাপাল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ উর্ধতন কর্মকর্তাদের তদন্তসহ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের জোর দাবী জানিয়েছেন।

জানা গেছে আনসার ভিডিপি কর্মকর্তা রীনা বেগেম রামপালে যোগদান করার পর আনসার ও ভিডিপি সদস্যদের বিভিন্ন সুযোগসুবিধা পেতে উৎকোচ গ্রহন করতে থাকেন। কেউ কোন প্রতিবাদ করলে ভিডিপি আবজাল ও হাকিমের মাধ্যমে তাকে সায়েস্তা করেন। এদের সায়েস্তা করতে সদস্যের দিয়ে সহি করিয়ে উর্ধতন কর্তৃপক্ষ বরাবর চিঠি দেন।

অভিযোগে জানা গেছে গত জাতীয় নির্বাচনে এ উপজেলায় ৪৮ টি ভোট কেন্দ্রে ৪৮ টি দল দেয়া হয়। ৪৮ দলে ১২ জন করে মোট ৫৭৬ আনসার ও ভিডিপি সদস্য দেয়া হয়। তাদের প্রতিজনের কাছ থেকে ৪০০ টাকা করে মোট উৎকোচ নেন ২ লক্ষ ৩০ হাজার ৪০০ টাকা। এর বাইরে প্রতিজন আনসার সদস্যদের কাছ থেকে ৮০০ থেকে ১ হাজার টাকা করে তোলে ওই সিন্ডিকেটের সদস্যরা। তাতে প্রায় সাড়ে ৪ লক্ষ থেকে সাড়ে ৬ লক্ষ টাকা মাঠ পর্যায় থেকে আদায় করেন।

চলতি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে সামনে রেখে এবারো ওই সিন্ডিকেট মেতে উঠেছে অর্থ বাণিজ্যে। এবার তারা ৪৯ টি ভোট কেন্দ্রে ৪৯ টি দল গঠন করেছে। প্রতি দলে ১৩ জন করে মোট ৬৩৭ জন সদস্যকে বাছাই করা হয়েছে।

আনসার ভিডিপি কর্মকর্তা রীনা প্রতিজনের কাছ থেকে ৩০০ টাকা করে মোট টাকা ১ লক্ষ ৯১ হাজার ১০০ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। এর বাইরে আবজাল, হাকিম, ও মোস্তফাগংয়েরা  সিন্ডিকেট করে প্রতিজন আনসার সদস্য নিয়োগের বিপরীতে ৮ শ টাকা থেকে ১৫ শত টাকা করে হাতিয়ে নিয়েছেন। এভাবে আরো ৫ লক্ষ টাকারও বেশী পিসি এপিসিরা হাতিয়ে নিয়েছেন। সাধারণ আনসারদের সাথে কথা বলে জানা গেছে এসব তথ্য। তারা জানান, আমরা কোন কথা বললে আমাদের আর কোন দিন ডিউটিতে পাঠাবে না।

আনসার ভিডিপি কর্মকর্তা এখানে যোগদান করার পর স্বভাবসুলভভাবে একের পর এক দুর্নীতি করেই চলেছেন। একবার এক মহিলা সদস্য ওই রীনাকে ৩ হাজার টাকা স্বামীকে ড্রাইভিং প্রশিক্ষণ বাবদ উৎকোচ দেওয়ার সময় গোপনে ভিডিপি করেন। এরপর থেকে ওই অফিসে কোন আলোচনা করার পূর্বে বিশেষ করে নির্বাচন ডিউটি বিষয়ে টাকা পয়সার আলোচনা করার সময় সবার মোবাইল ফোন জব্দ করে রেখে তারপর আলোচনা করেন। কেহ কোন কথা সাংবাদিক বা কোন কর্তৃপক্ষের কাছে ফাঁস করলে তাকে হয়রানির শিকার হতে হয়।

অভিযোগের বিষয়ে উপজেলা আনসার ও ভিডিপি কর্মকর্তা রীনা বেগমের কাছে জানতে চাইলে তিনি সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, গ্রুপ কমান্ডররা টাকা নেয়। আমি কোন টাকা পয়সা কারো কাছ থেকে নেইনি। মোস্তফা, ফরিদ, ফাতেমা আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে এসব রটাচ্ছে। এরপরে আনসার কর্মকর্তা রীনা সাংবাদিকদের আবার তার কার্যালয়ে ডেকে নেন। কথার ফাঁকের এক পর্যয়ে তিনি নিউজ না করার অনুরোধ করে তার পার্স ব্যাগ থেকে টাকা বের করে সাংবাদিকদের ম্যানেজ করার চেষ্টা করেন।

এ বিষয়ে রামপাল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রহিমা সুলতানা বুশরা এর মুঠোফোনে বিষয়টি অবগত করে দৃষ্টি আকর্শন করা হলে তিনি হতবাক হয়ে যান। পরে তিনি সাংবাদিকদের জানান, লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যাবস্থা নেয়া হবে।

রামপাল উপজেলা উন্নয়ন সংগ্রাম সমন্বয় কমিটির সভাপতি এ্যাডভোকেট মহিউদ্দিন শেখসহ নেতৃবৃন্দ উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের তদন্তসহ আইনানুগ ব্যাবস্থা গ্রহনের জোর দাবী জানিয়েছেন।#

শেয়ার করুণ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও সংবাদ পড়ুন
© All rights reserved © 2023 channel7online.com
Developed by: A TO Z IT HOST
Tuhin