শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ০৮:৩২ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
বাগেরহাটের মোল্লারহাটে ১ কেজি গাঁজাসহ কারবারি আটক নবাবগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় মোটরসাইকেল আরোহী নিহত মধুপুরে বদলি হওয়া তিন শিক্ষককে সদর ক্লাস্টারে ফুলের শুভেচ্ছা এমপি বনাম জনতা- ঝিনাইগাতী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ত্রিমুখী লড়াই  নাগরপুরে সংঘর্ষে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা নিহত নাগরপুরে কিশোরগ্যাংয়ের হামলায় নিহত ১ প্রচন্ড গরমে পথচারীদের মাঝে পানীয় ও খাবার স্যালাইন বিতরণ বাগেরহাটের ফকিরহাটে ঘরথেকে নারীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার শেরপুরে ছাত্র কল্যান পরিষদের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত ঝিনাইগাতীতে ১লা মে আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস উপলক্ষে র‍্যালী ও আলোচনা সভা

মধুপুরে কৃষি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কৃষকের কৃষিযন্ত্র বিক্রির অভিযোগ

Reporter Name
  • Update Time : সোমবার, ২২ এপ্রিল, ২০২৪
  • ১৬ Time View

স্টাফ রিপোর্টার,টাঙ্গাইল:

 

মধুপুরে অনেক কৃষকের নামে ভর্তুকির টাকায় কেনা মেশিন বরাদ্দ ও সরবরাহ হলেও কৃষকেরা কিছুই জানেন না। টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তাঁর পছন্দের লোকদের নামে মেশিন বরাদ্দ দেখিয়ে বিক্রি করে অর্ধকোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ১১টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভা নিয়ে গঠিত মধুপুর উপজেলা কৃষি বিভাগ ৩৪টি ব্লকে বিভক্ত। প্রতিটি ব্লকের কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া, সরকারি প্রণোদনা পাওয়া নিশ্চিত করার প্রাথমিক কাজগুলো উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের মাধ্যমেই হওয়ার কথা।

কিন্তু কৃষকদের অভিযোগ, মধুপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আল মামুন রাসেল ব্যতিক্রম। তিনি তাঁর পছন্দের লোকদের দিয়ে অধিকাংশ কাজ সম্পাদন করেছেন। পছন্দের লোকদের মধ্যে রয়েছেন অফিস সহকারী জোবায়ের হোসেন, নৈশপ্রহরী জিয়াউর রহমান এবং উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আল মামুন রাসেলের বেতনভুক্ত ব্যক্তিগত কর্মচারী বাবুল হোসেন। এ ছাড়া উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা তাপস কুমার সরকার, আব্দুর রহিম রাজু, মাজেদুর রহমানসহ বেশ কয়েকজন জড়িত।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্র জানায়, গত কয়েক বছরে মধুপুরে কৃষিসংশ্লিষ্ট তিন শতাধিক মেশিন কৃষকদের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে। এই যন্ত্রগুলোর কোনোটি বিনা মূল্যে, কোনোটি শতকরা ৬৫ বা ৫০ ভাগ প্রণোদনার মাধ্যমে বিতরণ করা হয়েছে। কিন্তু কৃষি কর্মকর্তা আল মামুন রাসেল তাঁর পছন্দের মানুষদের দিয়ে কৃষকের আইডি কার্ড সংগ্রহ করে তাঁদের নামে মেশিন বরাদ্দ দেখিয়ে বিক্রি করে দেন।

কৃষি অফিসের তথ্য বলছে, মির্জাবাড়ী ইউনিয়নের জহির উদ্দিন রানার নামে বরাদ্দ হওয়া মেশিন তিনি গ্রহণ করেছেন। তবে রানা বলেন, তাঁর নামে ধান মাড়াই কল বরাদ্দ হয়েছে, তাই তিনি জানেন না।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কৃষি কর্মকর্তা আল মামুন রাসেল, তাঁর অফিস সহকারী জুবায়ের হোসেন তাঁর নামে ওই মেশিন বরাদ্দ দেখিয়ে বিক্রি করে টাকা আত্মসাৎ করেছেন। কাগজে-কলমে কুড়াগাছার তানভীর হাসান তুহিন ও জটাবাড়ী গ্রামের দেলোয়ার হোসেনকে ভুট্টামাড়াই যন্ত্র সরবরাহ করা হলেও বাস্তবে তাঁরা পাননি।

মধুপুরের বিত্তিবাড়ী গ্রামের কৃষক আব্দুল লতিফ ৬৫ ভাগ ভর্তুকির পাওয়ার টিলার পেয়েছিলেন। কৃষি অফিসের কর্তারা ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা জমা দিয়া মেশিন নিতে বলায় তিনি মেশিন নেননি।

আব্দুল লতিফ বলেন, ‘আমি ভর্তুকি পামু ১ লাখের ওপরে। সেখানে কৃষি অফিস ভর্তুকি দিব মাত্র ৭ হাজার টাকা। তাই মেশিন আর নেই নাই। অহন হুনি আমার নামের মেশিন তুইলা বেইচা হালাইছে। আমি এর একটা বিহিত চাই।’

ভবানিটেকি গ্রামের মজিবর রহমানের নামে প্রায় ৩ লাখ টাকা মূল্যের পটেটো ডিগার দেওয়া হয়েছে। তাঁর বরাদ্দ তালিকায় ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরে ফোন দিয়ে তাঁকে পাওয়া যায়নি। ওই মোবাইলের সূত্র ধরে পাওয়া যায় পুন্ডুরা গ্রামের আব্দুল কদ্দুছকে; যার নামে দেওয়া হয়েছে ধান মাড়াই যন্ত্র। প্রণোদনার মাধ্যমে পাওয়া ওই ধান মাড়াই যন্ত্র বিক্রি করে ফেলেছেন তিনি।

এদিকে কম্বাইন্ড হার্ভেস্টার বিতরণে প্রতিটি মেশিনে ১০ লাখ ৫০ হাজার থেকে ১৫ লাখ টাকা পর্যন্ত ভর্তুকি দেয় সরকার। এই প্রকল্পের আওতায় মধুপুরে ১৭টি মেশিন সরবরাহ করা হয়েছে। এই মেশিন বিতরণেও অনিয়ম হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আল মামুন রাসেলের যোগসাজশে কদিন পরেই কম্বাইন্ড হার্ভেস্টার বিক্রি করেছেন শাহীন মিয়ার শিষ্য আনোয়ার হোসেনের কাছে। পরে লাভের টাকা ভাগাভাগি করেছেন তাঁরা।

উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা তাপস কুমার সরকার বলেন, ‘কৃষকের সঙ্গে করা চুক্তিপত্রে আমার স্বাক্ষর নেই। এ ব্যাপারে আমি কিছুই জানি না। বিষয়টি স্যার জানেন।’

উপজেলা কৃষি অফিসের অফিস সহকারী এস এম জুবায়ের বলেন, ‘স্যারের নির্দেশে আমি কাজ করেছি। অনেক চুক্তিপত্রে আমিও স্বাক্ষর করেছি।’

মধুপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আল মামুন রাসেল সম্প্রতি বদলি হয়েছেন। তবে অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এ ব্যাপারে আমি কিছু বলতে পারছি না।’

টাঙ্গাইল কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত উপপরিচালক মোহাম্মদ দুলাল উদ্দিন বলেন, ‘এমন অনিয়মের বিষয় আমি জানি না। বিষয়টি তদন্ত করে পদক্ষেপ নেব।’

শেয়ার করুণ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও সংবাদ পড়ুন
© All rights reserved © 2023 channel7online.com
Developed by: A TO Z IT HOST
Tuhin